Thursday, August 15, 2019

গুগল র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর – পর্ব ০৩



হাসান ব্লগ/ hasanblog/ talenthouse24




“গুগলের গুরুত্বপূর্ন র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে ৩য় আর্টিকেলে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। এটি মূলত একটি সিরিজ আর্টিকেল। এর আগে যারা এখনো “গুগলের গুরুত্বপূর্ন র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর” নিয়ে আমার লেখা ১ম এবং ২য় আর্টিকেল পড়েননি, আশা করি তারা এই সিরিজের আগের আর্টিকেলগুলো পড়ে নিবেন

গুগলের গুরুত্বপূর্ন র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর – পর্ব ০১

গুগলের গুরুত্বপূর্ন র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর – পর্ব ০২



সর্বশেষ ২টি আর্টিকেলে আমরা গুগলের র‌্যাকিং সম্পর্কিত মোট ৩০ টি ফ্যাক্টর সম্পর্কে ধারনা পেয়েছি। এই আর্টিকেলেও আমরা গুরুত্বপূর্ন আরো ১০ টি র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে ধারনা পাবো। তাহলে শুরু করা যাক।


৩১. ইউজার ফ্রেন্ডলি লে-আউট

একটা সময় ছিলো যখন লাল-নীল-সবুজ-হলুদ সহ যত ধরনের রং আছে, সব ধরনের রং দিয়ে ওয়বেসাইট ডিজাইন করা হতো। অর্থাৎ সাইট টি ইউজার ফ্রেন্ডলি হল কিনা তা নিয়ে মাথা ঘামাতনা অনেকেই। তবে এখন এটি নিশ্চিত যে, ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসকে গুগল বেশ গুরুত্বপূর্ন র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে। তাই SEO ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে।
সাইট লেভেল ফ্যাক্টর
৩২. ডোমেইন ট্রাস্ট/অথরিটি

গুগল তখন ই একটি সাইটকে গুরুত্ব দেয়, যথন সাইটের ডোমেইন ট্রাস্ট বেশি থাকবে। ডোমেইন ট্রাস্ট বলতে এখানে ডোমেইনের ওভারঅল ভ্যালু / অথরিটিকে বোঝানো হয়েছে। মাথায় প্রশ্ন আসতেপারে, ডোমেইন ট্রাস্ট তাহলে কিভাবে বাড়বে? ডোমেইনের ট্রাস্ট / ওভারঅল ভ্যালু / অথরিটি যা ই বলিনা কেন, এটা বাড়ানোর একমাত্র পথ কোয়ালিটি ব্যাকলিংক।

আপনার ওয়েবসাইট যখন আপনার নিশ রিলেভেন্ট কোনো কোয়ালিটি সাইট থেকে ব্যাকলিংক পাবে, তা গুগলের কাছেও একটা সিগন্যাল হিসেবে যাবে, যে আপনার ওয়েবসাইটটিও ওই বিষয়ের একটি ওয়েবসাইট। এভাবে ধীরে ধীরে ব্যাকলিংকের মাধ্যমে ডোমেইনের ট্রাস্ট বাড়াতে হবে।


৩৩. সাইট আপডেট

পূর্বের ২ নম্বর আর্টিকেলের ১৭নম্বরের ফ্যাক্টরের সাথে এটির বেশ মিল আছে, ওখানে বলা হয়েছিলো কন্টেন্ট আপডেটের কথা। শুধু কন্টেন্ট ই না, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ওয়েবসাইট আপডেট করাটাও জরুরী। গুগল সবসময় চায় তার ভিজিটররা যেন একুরেট এবং আপডেট ডাটা পায়, মূলত এ কারনেই প্রতি মাসে মাসে গুগলের আপডেট আসে। সাইট আপডেট বলতে এখানে সাইটের থিম, প্লাগিন থেকে শুরু করে কন্টেন্টকেও বোঝানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত বোঝার জন্য আপনার গুগল ফ্রেশনেস এলগরিদম সম্পর্কে ধারনা নিতে পারেন এই আর্টিকেল থেকে।

https://www.searchenginejournal.com/google-algorithm-history/freshness-update/

এই সিরিজ আর্টিকেল গুলো লেখা শেষ হলে এবং আপনাদের থেকে ভালো সাড়া পেলে আশা করি গুগলের মেজর এলগরিদমগুলো নিয়ে একটি সিরিজ আর্টিকেল লিখবো।


৩৪. পেইজ সংখ্যা

র‌্যাকিং এর জন্য আপনার ওয়েবসাইটে মোট কতগুলো পেজ আছে তা ও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে গুগল। আমরা এর আগের ফ্যাক্টরগুলোতে জেনেছি যে র‍্যাংকিং এর জন্য সাইটের অথরিটি একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে, সেক্ষেত্রে ১০ টি পেজ থাকা ওয়েবসাইটের তুলনায় ১০০ পেজ থাকা ওয়েবসাইটকে গুগল বেশি প্রায়োরেটি দেবে। কন্টেন্ট কোয়ালিটি খুব বেশি ভালো হলে অনেক ক্ষেত্রে কম পেজের ওয়বেসোইটও র‌্যাংক করে। তবে এক্ষেত্রে ব্যাকলিংক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।


৩৫. সাইটম্যাপ

সাইটম্যাপ গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে খুব সহজেই আপনার সাইট ক্রল করতে সাহায্য করে। ওয়েবসাইটে সাইটম্যাপ রাখাটা জরুরী।






৩৬. Contact US পেজ

গুগল ওয়েবসাইটে “Contact us” পেজ রাখাকে প্রেফার করে। যাতে করে ভিজিটরের কোন প্রশ্ন থাকলে তা সে সহজে ওয়েবসাইট অথরিটি বা মালিককে জানাতে পারে।


৩৭. SSL

Secure Sockets Layer বা SSL কি হয়তো অনেকেই জানেন, যারা জানেননা তারা এই আর্টিকেলটি পড়ুন- https://www.digicert.com/ssl/

খুব সংক্ষেপে বললে Secure Sockets Layer বা SSL এক ধরনের সিকিউরিটি প্রোটোকল। পেমেন্ট ট্রাকজেকশন, ডাটা ট্রান্সফার, সোশ্যাল সাইটের সিকিউরিটিসহ বিভিন্ন কাজে SSL ব্যবাহৃত হয়ে থাকে। সম্প্রতি গুগলের নিজস্ব ব্রাউজার ক্রোম, SSL ব্যতীত ওয়েবসাইটগুলোকে ভিজিট না করার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছে। উল্লেখ্য, গুগল তাদের যে কটি র‌্যাকিং ফ্যাক্টর সম্পর্কে সবাইকে নিশ্চিত করেছে তার মধ্যে SSL একটি। অর্থাৎ সাইটকে ভালো অবস্থানে দেখতে হলে অবশ্যই ওই সাইটে SSL বা Secure Sockets Layer থাকা আবশ্যক। ইন্টারন্যাশনাল ডোমেইন এবং হোস্টিং প্রোভাইডাররা SSL এর জন্য চার্জ করে থাকে। তবে ইদানিং লোকাল কিছু সার্ভিস প্রোভাইডার কে দেখা যাচ্ছে ফ্রিতেই এই সার্ভিসটি দিতে।


৩৮. Terms এবং Service পেজ

সাইটে Terms এবং Service পেজ থাকার মানে আপনার ওয়বেসোইটটাতে কি ধরনের সার্ভিস বা প্রোডাক্ট পাওয়া যায় এবং তাতে কি ধরনের Terms & Condition আছে সে সম্পর্কে ভিজিটরকে শুরুতেই ধারণা দিচ্ছেন, যা আপনার ওয়েবসাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সহায়তা করে।


৩৯. ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট

একটি সাইটকে ধ্বংশ করার জন্য মাত্র ১টা ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট ই যথেস্ট। গুগল কপিরাইট ইস্যুতে খুবই কঠোর। আগে অনেকে ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট দিয়েও র‌্যাংক করতো, কিন্ত গুগল এখন আগের থেকে অনেক স্মার্ট। আমি ব্যক্তিগতভাবে কন্টেন্ট নিজে লেখার পক্ষে। তবে কোনভাবেই যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে কন্টেন্ট রাইটারের থেকে কন্টেন্ট ডেলিভারি নেয়ার সময় ভালো প্লাগারিজম চেকার সফটওয়ার দিয়ে কন্টেন্ট চেক করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমি CopyScape প্রেফার করি। তবে এটি একটি পেইড টুল।

ম্যানুয়ালী ও এটি চেক করা যায়। একটি লাইন নিয়ে তার শুরুতে এবং শেষে “” বসিয়ে সার্চ দিলে যদি কোন রেজাল্ট আসে, তার মানে এটা প্লাগারাইজ কন্টেন্ট।


৪০. মোবাইল ফ্রেন্ডলি

গুগলে র‌্যাকিং এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ন ফ্যাক্টর হলো ওয়েবসাইট রেস্পন্সিভ হওয়া। কারন USA তে ল্যাপটপ বা ডেক্সটপের থেকে মানুষ এখন বেশি মোবাইল থেকে সার্চ করে। তাই আপনার ওয়েবসাইট যদি মোবাইল ফ্রেন্ডলি না হয়, তবে গুগল মোবাইল সার্চ থেকে আপনার সাইটকে র‌্যাংক দিবেনা। যার ফলে আপনি ভিজিটর হারাবেন। যারা মোবাইল ফাস্ট ইন্ডেক্স সম্পর্কে জানেননা তারা এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

https://www.searchenginejournal.com/mobile-first-index-actually-mean/178017/



আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি কিনা তা গুগলের নিজস্ব একটি টুল ব্যবহার করেই আপনি নিশ্চিত হতে পারেন। এই লিংকে গিয়ে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দিলে গুগল আপনাকে জানাবে আপনার সাইটটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি কিনা।

https://search.google.com/test/mobile-friendly



আজ এখানেই শেষ করছি। চেষ্টা করব খুব শীঘ্রই “গুগলের গুরুত্ব পূর্নর‌্যাকিং ফ্যাক্টর” সম্পর্কিত ৪র্থ আর্টিকেলটি পাবলিশ করার জন্য।

আর্টিকেল সম্পর্কিত আপনাদের যেকোন মতমত জানতে পারেন কন্টেন্টে, আমি আপনাদের প্রতিটি কমেন্ট ই গুরুত্ব সহকারে পড়ি এবং রিপ্লে দেয়ার চেষ্টা করি।

No comments: